মেঘনা টিভি নিউজ ডেস্ক:
নাহিদ ইসলাম। মাত্র ২৬ বছরেরও কম বয়সী বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের মধ্যে একজন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানের এই স্নাতক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা।
এবার টাইমস ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের ‘টাইম-১০০’ তে নাহিদ ইসলামের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির এই তালিকা প্রকাশ করে বিখ্যাত সাময়িকীটি। বুধবার (২ অক্টোবর) এই তালিকা প্রকাশ করে টাইম ম্যাগাজিন। ১৯৯৯ সাল থেকে প্রতিবছর এই তালিকা প্রকাশিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে গত জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে পরিচিত হয়ে ওঠেন নাহিদ ইসলাম। ওই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে প্রধান ভূমিকা রাখেন তিনি। বিশেষ করে গত ৩ আগস্ট জাতীয় শহিদ মিনারে লাখো জনতার সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন নাহিদ।
আর সেই এক দফা দাবি হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পদত্যাগ। ওই আন্দোলনেই গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন তিনি। এরপর থেকেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন নাহিদ।
নাহিদের সম্পর্কে টাইম ম্যাগাজিন লিখেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেক নেতার মধ্যে নাহিদ অন্যতম, বাংলাদেশের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরে জনমানুষের কাছে তার পরিচিতি আরো বাড়তে থাকে। সেই নাহিদই ৩ আগস্ট জাতীয় শহীদ মিনারে লাখো জনতার সমাবেশে আন্দোলনকারীদের হয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। কী ছিল ঐতিহাসিক একদফা, আজ কারো অজানা নয়। ওইদিন বিকেলে নাহিদ ইসলাম মাইকে সমবেত মানুষের উদ্দেশে বলেন, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।
এই এক দফাটি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ। টাইমকে নাহিদ বলেছেন, কেউ ভাবতেও পারেনি তাকে (হাসিনাকে) উৎখাত করা সম্ভব হবে। কিন্তু তাই করে দেখায় মুক্তিকামী জনতা, দেশব্যাপী তীব্র বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান হাসিনা।
তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোই এখন সামনে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে জেন জি’র দুই উপদেষ্টার একজন নাহিদ ইসলাম আর অন্যজন হচ্ছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
টাইম বলেছে, ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যেভাবে ভেঙে পড়েছে, এখন তাকে মেরামতের চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে নতুন সরকারকে। এ বিষয়ে নাহিদ বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।