বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নরসিংদী বেলাব তে সংখ্যালঘুদের ২০০ বছরের পুরানো মার্কেট জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগ আতাউর গংদের বিরুদ্ধে তেরখাদায় নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মল্লিক ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে উদ্দীপনের উদ্যোগে সুবিধা বঞ্চিতদের মাঝে শীতকালীন প্যাকেজ বিতরণ পিরোজপুরে প্রবীন স্বার্থ সুরক্ষায় সমাজসেবার সাথে রিকের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর তালতলীতে সিপিপির শ্রেষ্ঠ সেচ্ছাসেবক হলেন লিটু আত্রাইয়ে লিগ্যাল এইড কমিটির ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় সাবেক এমপি পোটন তিন দিনের রিমান্ডে আত্রাইয়ে টিসিবির স্মার্ট পরিবার কার্ড বিতরণ, সাংবাদিকদের সাথে রায়পুরার ওসির মতবিনিময় সভা। নরসিংদীতে ছাত্রদলের কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা 

জয়পুরহাটে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতি,আহত ৬ ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট

কালাইয়ের বাখরা গ্রামে একটি বাড়িতে জিনিসপত্র তছনছ করে ডাকাতরা।

জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ১৫-২০ জনের হাফপ্যান্ট ও মুখোশপরা ডাকাতরা বাড়ির লোকজনকে জখম করে তাদের বেঁধে রেখে নগদ ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা, চারটি গরু, স্বর্ণালঙ্কার ও চাল লুট করেছে।

এ সময় ডাকাত দলের কয়েক সদস্য বাড়ির এক নারী সদস্যকে শ্লীলতাহানিও করেছে বলে ওই পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন। শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার বাখরা গ্রামের কছিমুদ্দিনের বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যদের দাবি- ডাকাতরা নগদ পাঁচ লক্ষাধিক টাকাসহ মোট ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ছয়জন।

আহতরা হলেন- মো. কছিমুদ্দিন (৭০), তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৫০), বড় ছেলে গোলাম মোস্তফা (৪০), গোলাম মোস্তফার ছেলে রাইফ হোসেন (৬), মেয়ে মিম্মা আক্তার (১৬) ও ছোট ছেলে এরশাদুল হকের স্ত্রী মালা বেগম (২৫)।

এদের মধ্যে গুরুতর রোকেয়া বেগম, গোলাম মোস্তফা, মিম্মা আক্তার ও মালা বেগমকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া কছিমুদ্দিন ও রাইফ প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।

শনিবার দুপুরে ডিবি পুলিশ, জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এমন দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় ওই এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানতে চাইলে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, ‘একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমরা এ ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারব বলে আশা করছি।

গ্রামবাসী, স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৯টার পর এরশাদুল হক বাড়ির পাশে একটি মাঠের গভীর নলকূপে চলে যান। পরিবারের অন্য সদস্যরা খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দেড়টার দিকে গাছ দিয়ে ১৫-২০ জনের হাফপ্যান্ট ও মুখোশপরা ডাকাত দল বাড়িতে ঢোকে।

তারা প্রথমে বাড়ির মালিক কছিম উদ্দিন ও তার স্ত্রীকে চাকু দিয়ে আঘাত করে তাদের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর ডাকাতরা কছিমুদ্দিনের বড় ছেলে গোলাম মোস্তফার ঘরে গিয়ে তাকে ডেকে তুলে তাদের স্বামী-স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে হাত-পা বেঁধে ফেলে।

তাদের কিশোরী মেয়ে মিম্মাকে একটি ঘরে আটকে রাখে। পরে ডাকাতরা এরশাদুলের ঘরে ঢোকে স্ত্রী মালা খাতুনকে মারপিট ও শ্লীলতাহানি করে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখে। এরপর ডাকাত দল চারটি ঘরে গিয়ে আসবাবপত্র ভেঙে লুটপাট করে দুটি পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে পালিয়ে যায়।

গোলাম মোস্তফার শিশু ছেলে রাইফ তার মা-বাবার হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয়। এরপর শিশু রাইফ তার দাদা-দাদি ও চাচির হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রতিবেশীদের ঘটনাটি জানায়। প্রতিবেশীরা দ্রুত এসে বাড়ির সদস্যদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। প্রতিবেশীরা গভীর নলকূপে গিয়ে এরশাদুল হককে বাড়িতে ডেকে আনেন।

গোলাম মোস্তফার শিশু ছেলে রাইফ বলে, সবার পরনে হ্যাফপ্যান্ট ও মুখ কালো কাপড়ে বাঁধা ছিল। তাদের সবার হাতে চাকু ছিল। চাকু দিয়ে আমার মা-বাবার শরীরে আঘাত করেছে। আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়েছে। আমি ভয়ে চুপচাপ ছিলাম। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর মা-বাবা মরে গেছে ভেবে দ্রুত তাদের বাঁধন খুলে দেই। এরপর বাইরে এসে আমার দাদা-দাদি ও চাচির বাঁধন খুলে দিয়েছি।

এরশাদুল হক বলেন, প্রায় ১৫-২০ জনের ডাকাতদল গাছ বেয়ে বাড়িতে ঢোকে সবাইকে মারপিট করে বেঁধে ফেলে। ডাকাতরা গোয়াল ঘর থেকে পাঁচটি গরু, নগদ পাঁচ লাখ ৩০ হাজার টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, ১৪ মণ চাল, টিভিসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিস লুট করেছে। পাঁচটি গরুর মধ্যে একটি বাছুর গরু সকালে মাঠে পাওয়া গেছে। ডাকাতরা সব মিলিয় মোট ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে। ডাকাতরা লুট করা মালামাল দুটি পিকআপ ভ্যানে নিয়ে গেছে। ডাকাত সদস্যরা আমার স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করেছে।

এরশাদুল হক আরও বলেন, আমার স্ত্রীর সঙ্গে ডাকাত দলের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে দুই ডাকাতের মুখের কালো কাপড় খুলে যায়। আমার স্ত্রী তাদের চিনতে পেরেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন শনিবার বিকেলে দৈনিক বাংলাকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


https://www.facebook.com/profile.php?id=100089135320224&mibextid=ZbWKwL