মেঘনা টিভি নিউজ ডেস্ক:
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে ওই দেশে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন বলে শুক্রবার ঘোষণা দেন। এই ১৮ হাজার মানে নতুন চাকরি না, নতুন কর্মী নেওয়া হচ্ছে না। গত ৩১ মে মাসের মধ্যে যারা মালয়েশিয়া যেতে পারেননি তারা সুযোগ পাবেন। মধ্যপ্রাচ্যে যেসব শ্রমিক ভাই-বোন যাচ্ছেন, তাদের জন্য বিমানবন্দরে আলাদা স্পেশাল লাউঞ্জের ব্যবস্থা করবো। আমরা ইতোমধ্যে জায়গা ঠিক করেছি, সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে কথা হয়েছে, আশা করি দুই সপ্তাহের মধ্যে হয়ে যাবে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় একাত্তর হলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ বিষয়ে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এবং মালয়েশিয়ার পার্কেসোর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, বিমান বন্দরে লাউঞ্জ হলে প্রবাসী শ্রমিক ভাই-বোনদের যন্ত্রণা অনেকটা দূর হবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য যে ভিআইপি সুবিধা সেগুলোও থাকবে। বিমানবন্দরে প্রবেশের মুহূর্ত থেকে প্লেনে ওঠার আগ পর্যন্ত যে লাউঞ্জ থাকে, সেই পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে তাদের সঙ্গে একজন লোক থাকবে সহায়তার জন্য। আমরা মনে করি, এটি প্রবাসীদের প্রতি উদারতা নয়, এটি উনাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা। এটি বহু আগে করা উচিত ছিল।
মালয়েশিয়ায় ১৮ হাজার কর্মী নিয়োগ ইস্যুতে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, গত শুক্রবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রমিকদের কল্যাণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন বলে ঘোষণা দেন। এর মানে এই নয়, যে নতুন কর্মী। এই ১৮ হাজার মানে নতুন চাকরি না, নতুন কর্মী নেওয়া হচ্ছে না। ১৭ হাজারের কিছু বেশি কর্মীর সব কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও মালয়েশিয়া সরকারের সময়সীমার মধ্যে সে দেশে যেতে পারেননি। নানা ধরনের জটিলতার কারণে তারা মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি।
যেহেতু ৩১ মের মধ্যে তারা যেতে পারেননি, তাই মালয়েশিয়া সরকার তাদের গ্রহণ করেনি। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের শ্রমিক ভাই-বোন অনেক টাকা দিয়েছিলেন, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য।
আমি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলাম, এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য। হোটেলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরুর আগে এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এই ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
এখন একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, প্রতিশ্রুতি মানেই কিন্তু নিশ্চিত না। আমরা মালয়েশিয়ায় আমাদের হাই কমিশন এবং আমাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই প্রতিশ্রুতি কার্যকর করতে যত দ্রুত সম্ভব প্রচেষ্টা চালাবো। আমরা একটা রোডম্যাপ তৈরি করবো।
ড. আসিফ নজরুল আরো বলেন, আমি বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। তার মধ্যে বলেছি, মালয়েশিয়ার বন্ধ শ্রম বাজার পুনরায় চালু করার বিষয়ে। পাশাপাশি যে ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে রিক্রুটমেন্ট প্রসেস সীমাবদ্ধ ছিল, সেটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। সব রিক্রুটিং এজেন্সি যাতে কাজ করতে পারে এবং প্রক্রিয়াটি যেন স্বচ্ছ হয়। কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করা যায় কিনা সেটিও বলেছি।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হামিদুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।